প্রণব ভট্টাচার্য বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি অভিযোগ, জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে দিলেন স্থানীয়রা

আনোয়ারা প্রতিদিন নিউজ ডেস্ক;

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ডুমুরিয়া রুদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০শে মে (সোমবার) দুপুরে স্কুলে গিয়ে তাকে স্থানীয়রা সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য কে মারধর করে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে দিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়রের করছেন ঐ দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রীর মা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিভিন্ন সময় ধূমপান করে ক্লাসে প্রবেশ করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মুখে ধোয়া ছাড়াসহ যৌন হয়রানি করে আসছিলো অনেক দিন যাবত। এ সব ঘটনায় গত ১৫ মে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় আজ সকালে বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা এ ঘটনায় বিচারের দাবি করে স্কুলটি ঘেরাও করে।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষককে মারধর করে জুতার মালা পড়িয়ে দিতে চায়। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর অভিভাবকরা জানায়, শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রায়ই সময় ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি তারা অন্য শিক্ষিকাদের জানালে তারা ছাত্রীদের অভিযুক্ত শিক্ষক থেকে সতর্ক থাকতেন বলেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানান, প্রণব কুমার ভট্টাচার্য আমার মেয়েকে যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি মেয়ে আমাদের জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।

ডুমুরিয়া রুদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতা দে বলেন, ঘটনাটি গত ১৫ মে জানতে পেরেছি। পরে সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ঘটনাটি শিকার করেন। একজন ছাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। এ ধরনের ঘটনা শিক্ষা পরিবেশকে কলঙ্কিত করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। হঠাৎ তারা (অভিভাবকরা) এসে আমাকে মারধর করে। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি আমাকে জানালে আমি তা সমাধান করতাম।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়ে গত ১৫ মে ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে সহকারী শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রশিক্ষণে থাকায় তদন্ত করতে দেরি হয়। আজ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনোয়ারা থানার ওসি সোহেল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে।